মামাতো বোন যখন বউ

লেখক:: ভাস্কর
কি রে কতোদুর পৌঁছালি...!!??
- এই তো আম্মু পৌঁছে যাচ্ছি ! মাত্র ব্যাস থেকে নামলাম । আর কিছুক্ষণের মধ্যে মামার বাসায় পৌঁছে যাবো । তুমি আমায় নিয়ে অযথা চিন্তা করো না ।
-চিন্তা তোকে নিয়ে করছি না । চিন্তা হচ্ছে তোর মামা -মামিদের নিয়ে । তুই যে শয়তান ছেলে !! দেখ আজকে ৬ বছর পর মামার বাসায় যাচ্ছিস !! খবরদার ওখানে একদম কোনো রকমের বাদরামী করবি না ।
- তুমি এই কথা বলতে পারলে আম্মু..!! তোমার কথা শুনে মনে অনেক ব্যাথা পেলাম । তুমি আমার নিজের আম্মু হয়ে এই কথা বলতে পারলে...!!?? যদিও বা আমার মাঝে মাঝে তোমাকে দেখে মনে সন্দেহ জাগে যে আমার মতো এমন একটা কিউট পোলা তোমার সন্তান হলাম কি করে...!!??
- এই শয়তান ছেলে একদম ফালতু কথা বলবি না । চুপচাপ ভাইয়ার বাসায় চলে যা । ( রাগি গলায় )
- ধম্কাচ্ছো কেনো..!! সত্য কথা বললে সবাইকে ছ্যাকা লাগে । যেমন এখন তোমার লাগলো ।
- আর একটা ফালতু কথা বললে ঠাটিয়ে তোর মুখ বন্ধ করে দেবো । কেমন শয়তান ছেলে !! নিজের মাকে কেউ এমন কথা বলে ..?? ( ধমকের সুরে )
- কেউ বলুক আর নাই বলুক আমি বলবো । আমি হলাম সত্য বাদী । সারাজীবন সত্যের পথে চলে অাসছি আর চলতে থাকবো । এতে আমার কোনো ভয় নেই। ( ভাব নিয়ে )
- ওমা তাই !! এটা তো ঠিক ভূতের মুখে রাম নাম । যে ছেলে সারাক্ষণ মিথ্যা কথা বলে সবাইকে জ্বালিয়ে মারে সে কিনা সত্য বাদী । কথাটা ঠিক আমি তোর মা হয়েও হজম করতে পারলাম না ।
- দেখো " আম্মু একদম ফালতু কথা বলবে না । নিজের ছেলের নামে মিথ্যা কথা বলতে তোমার বুকে বাদ্ধছে না । ধুর ফোন রাখো তো তোমার সাথে কথা বলার মুডটাই নষ্ট করে দিলে ।
- আরে শোন..........??
দিলাম ফোন কেটে । আরেকটু হলেই আম্মু আমার মানসন্মান সব আপনাদের সামনে পানি করে দিতো । কেমনটা লাগে বলুন !! নিজের সন্তানের ব্যাপারে এমন কথা কি কেউ বলতে পারে । ইশ " আমার কপাঁলটাই খারাপ । ওহ্ আপনাদের তো এখনও আমার পরিচয়টাই দিলাম না । আমি হলাম গ্যা "সাকিল । সাফিন ইসলাম সাকিল । সবাই আমাকে সাকিল বলেই ডাকে ।এবার ইন্টার ২য় বর্ষের ছাত্র আমি । আব্বু -আম্মুর একটিমাত্র বাদরের থুক্কু আদরের সন্তান । থাকি দিনাজপুরে ।
এখন যাচ্ছি ঢাকায় আমার মামার বাসায় । সেখানে থেকেই আমার স্টাডি শেষ করবো । কাল রাতে রওনা দিয়েছিলাম আর আজকে এই মাত্র ব্যাস থেকে নামলাম । যদিও বা আব্বু বার বার বাসার গাড়িতে করে যেতে বলছিলো ।কিন্তু আমি শুনি নি । আমার দুরের জায়গায় কারের চেয়ে ব্যাসে জার্নি করতে বেশি ভালো লাগে ।
আপনাদের সাথে কথা বলতে বলতে অনেকখানি রাস্তা চলে এলাম । এখন সমস্যা হলো মামার বাসা তো চিনি না । আজ থেকে প্রায় ৬ বছর আগে এখানে এসেছিলাম তাও আবার ছোট থাকতে আম্মুর সাথে । তারপর আর আসা হয়নি । এখন মামার বাসা কোনটা চিনবো কি করে ..!! যদিও বা মামার সাথে ফোনে কথা বলে সব কিছু ভালো ভাবে বুঝিয়ে নিয়েছি । কিন্তু তারপরেও পারছি না ।
- হ্যাঁ " হ্যালো ' মামা..!!
- হুম বল " কতোদুর এলি...!!?? ( মামা )
- এসে তো গেছি কিন্তু তোমার বাসা খুজে পাচ্ছি না । কোন জঙ্গলে বাসা তৌরি করেছো তোমরা । সেই তখন থেকে খুজে বেড়াচ্ছি ।
- বলিস কিরে..!!?? আচ্ছা তুই এখন কথায় আছিস ??
- কথায় আবার এই তো গাজিপুর চৌরাস্তার মোড়ে ।
- আরে তুই ওখানে কি করছিস...!! ওখানে তো আমাদের বাসা না । শোন আর দাড়িয়ে না থেকে ওখান থেকে আগে রিক্সা অযবা সিএন.জি যে কোনো একটাতে চড়ে বোটবাজারে চলে আয় । ওখানে এসে যে কাউকে আমার নাম জিজ্ঞাসা করলেই সবাই আমার বাসার পরিচয় দেখিয়ে দেবে । তারপর সোজা বাসায় চলে আসবি ।
- হুম ঠিক আচ্ছে । তুমি মামিকে খাবার রেডি করতে বলো আমি আসছি ।
- আগে আয় তারপর বলিস ।
- হুম .....।
আর এখানে দাড়িয়ে রইলাম না । আগে একটা রিক্সা ভাড়া করে তারপর সোজা বোটবাজারের মোড়ে চলে এলাম । রিক্সা ওয়ালাকে ভাড়া মিটিয়ে দিয়ে তারপর ঘাড়ে ব্যাগ নিয়ে মামার বাসা খুজতে লাগলাম ।
রাস্তার এপাশ ওপাশ দেখে দেখে হাটছি হঠাৎ লক্ষ্য করলাম রাস্তার এক পাশে একটা কুকুর আরাম করে ঘুমিয়ে আছে । বেচারাকে এভাবে ঘুমিয়ে থাকতে দেখে আমার মনে খুব মায়া হলো । আমি আবার এদের খুব ভয় পাই । তাই আর কিছু না ভেবে চুপচাপ ব্যাগ ঘাড়ে নিয়ে কুকুরটার পাশ দিয়ে চলে যেতে লাগলাম । সব কিছু ঠিক ঠাকই চলছিলো কিন্তু ওইযে বলে না কপাল খারাপ থাকলে যা হয় । চলেই আসছিলাম কিন্তু পরে কি যেনো ভেবে আবার কুকুরটার কাছে গেলাম । তারপর রাস্তায় পরে থাকা একটা ছোট্ট পাথরের টুকরো নিয়ে দিলাম এক ঢীল । ব্যস তাতেই সব হয়ে গেল ।
সালার কুকুর সাথে সাথে ঘুম থেকে জেগে গেল । তারপর ভাউ "ভাউ করতে করতে অামার দিকে দৌড় । এদিকে আমিও আর দাড়িয়ে না থেকে দিলাম এক দৌড় । তবে বেশিক্ষণ দৌড়াতে পারলাম না । ব্যাটা আমার কাছেই চলে এসেছিলো। জানের ভয়ে আগে পিছে না ভেবে সামনে কাউকে আসতে দেখে সাথে সাথে তাকে জড়িয়ে ধরে তার কোলে চড়ে বসলাম । দেখলামও না ওটা মেয়ে নাকী ছেলে ।
এদিকে কুকুর বাবাজীর আমার এমন অবস্থা দেখে মনে হয় তার মনে আমার জন্য কিছুটা দয়া জন্মেছে । বেচারা আর সেখানে দাড়িয়ে না থেকে চুপচাপ চলে গেল । আমিও সাথে সাথে হাফ ছেড়ে বাচঁলাম । যাক বাবা কোনো মতে বাচাঁ গেল ।
তখন যদি না দেখে তাকে জড়িয়ে ধরতাম তাহলে আজকে আমায় হাসপাতালে যেতে হতো । কিন্তু আমি জড়িয়ে ধরলাম টা কাকে..!??
- এই ছেলে আপনি আমায় জড়িয়ে ধরেছেন কেনো !! ছাড়ুন বলছি । ( চিৎকার করে)
কথাটা শোনার সাথে সাথে যাকে দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরেছিলাম তাকে ছেড়ে দিলাম । তাকে ছেড়ে দিয়ে দেখতে লাগলাম যে আসলে জড়িয়ে ধরেছিলাম টা কাকে..!! কিন্তু একি এ আমি কাকে দেখছি !! এ তো নীল পরী । তার মানে একেই তখন না দেখে কুকুরের ভয়ে জড়িয়ে ধরেছি !! সেই তো বলি যাকে জড়িয়ে ধরেছি তার শরীরটা এতো নরম কেনো !!? মেয়েটা দেখতে তো একদম সেই লেভেলের ঝাক্কাস সুন্দরী । হিজাব পড়ে আরো বেশি সুন্দর লাগছে তাকে । কিন্তু মেয়েটার দিকে তাকিয়ে দেখলাম আমার উপর পুরো রেগে আছে ।
- জ্বী আপু আমাকে বলছেন !! ( পুরোই নাদান বাচ্চা )
- আপনি ছাড়া এখানে আশে পাশে আর কেউ কি আছে !! কাউকে কি দেখতে পাচ্ছেন ?? ( আরো রাগি গলায় )
- জ্বী আছে । কিন্তু তারা হয়তো আপনার সাথে কথা বলবে না । আপনার কথার যে ঝাঝ্ । ভয়ে কেউ আশে পাশেও আসবে না ।
- ফাজলামী করছেন আমার সাথে !! একে তো অন্যায় করেছেন তার উপর আবার বড় বড় লেকচার ঝাড়ছেন !!
- অন্যায় !! আমি আবার কখন কি অন্যায় করলাম !! আমার মতো নাদান বাচ্চা কি কখনও কোনো অন্যায় কাজ করতে পারে ?
- মশকরা করেন আমার সাথে !! আপনি আমায় না বলে জড়িয়ে ধরেছিলেন কেনো !! তারউপর আবার জরিয়ে ধরে সোজা কোলে উঠে গেছেন । আর একটু হলে তো আমি পড়েই যেতাম । ( মেয়েটা)
- ওহ্ স্যরি " আপনাকে না বলে জড়িয়ে ধরার কারণে । আসলে তখন আমার পিছনে কয়েকটা সুন্দরী মেয়ে তাড়া করছিলো । তাদের অনেক ভাবে বোঝালাম কিন্তু তারা কিছুতেই বুঝতে চাইছিলো না । তাদের নাকী আমায় চাই চাই । শেষে কোনো উপায় না পেয়ে দৌড়ে পালিয়ে আসছিলাম । কিন্তু একসময় যখন আর পারলাম না তখন আগে পিছে না ভেবে তাদের হাত থেকে বাচাঁর জন্য আপনাকে জড়িয়ে ধরেছিলাম ।
- তাই বলে আমার কোলে চেপে যাবেন !! আর একটু হলে তো আমি সব রাস্তার পাশে পড়ে যেতাম । আর হ্যাঁ আপনি কলে ওঠার জন্য আর কাউকে দেখতে পেলেন না !! আমাকে এসেই জড়িয়ে ধরতে হবে । যতোসব ফালতু ছেলে । আমি আপনাদের মতো ছেলেদের অনেক ভালো ভাবে জানি । সারাক্ষণ শুধু মেয়েদের পিছন পিছন কুকুরের মতো লেগে থাকেন ।
- ওহে " বালিকা মুখ সামলে কথা বলো !! আমরা ছেলেরা মোটেও এমন না । নিজের দোষ বিনা কারণে অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দিচ্ছো ?? তুমি কোন মহা সুন্দরী হে ,যে তোমায় জড়িয়ে ধরতে যাবো !! আমার কি দেশে মেয়ের অভাব পড়ছে নাকী !!
- কিহ্ এতো বড় কথা ?? ( রাগে ফুসছে )
- তা নয় তো কি !! আমি তো জড়িয়ে ধরার আগে ভেবেছিলাম যে সামনে যেটা আছে ওটা মনে হয়ে রাস্তার পাশে দাড়িয়ে থাকা একটা খাম্বা । যদি জানতাম যে আপনার মতো একটা আটা ময়দা মাখা পেত্নী আসছে তাহলো কোনো দিনো জড়িয়ে ধরতাম না ।
আমার কথাশুনে তো বালিকা বিনা তেলে পুরো ৪২০ ভোল্টে জ্বলে উঠলো ।
- আর একটা ফালতু কথা বললে থাপ্পড় দিয়ে তোর মুখ বাকা করে দেবো । শয়তান ছেলে কথাকার !! একে তো আমায় বিনা অনুমতিতে জড়িয়ে ধরেছিস । তারউপর আমায় পেত্নীও বলছিস !! আর একটা ফালতু কথা বলতে পুরো রাস্তার মাঝে তোকে জুতো পেটা করবো । (রেগে আগুন )
- আমি মনে হয় তখন আপনার হাতে মার খাওয়ার জন্য হাতে হাত রেখে বসে থাকবো । থাপ্পড় আমিও দিতে জানি । আমার সাথে অন্যায় করতে আসবেন তো আমিও আপনার সাথে অন্যায় করবো । আমার আম্মু আমাকে কখনও অন্যায় সহ্য করতে সেখায় নি । সো " এই ভুল ভেলেও চেষ্টা করবেন না ।
- ফালতু ছেলে কথাকার। তোর সাথে কথা বলার ভুল । যা ভাগ এখান থেকে । বিকেল বেলার মুডটাই নষ্ট হয়ে গেল ।
- এই কথাটা আমার বলা উচিৎ। যতোসব ফাজিল মেয়ে । আপনার জন্য আমি আমার মামার বাসার ঠিকানাটাও ভুলে গেলাম । কোন খারাপ কপাল নিয়ে যে আপনার সাথে দেখা হলো । নাহ্ এখানে আর থাকা যাবে না । চলি ।
চুপচাপ সেখান থেকে চলে আসছিলাম। আবার কি যেনো ভেবে তার কাছে চলে এলাম ।
- আচ্ছা আপু এখানে রফিক সাহেবের বাসা কোনটা...??
- কেনো তুই রফিক সাহেবের বাসার ঠিকানা যেনে কি করবি !! (খানিকটা ভ্রু কুচকে )
- দরকার আছে । জানলে একটু বলুন না প্লিজ ।
- আগে বল রফিক সাহেবের বাসার ঠিকানা জেনে তুই কি করবি !! কে হয় উনি তোর ??
- উনি আমার মাম...না মানে উনি আমার শশুর হন । উনার মেয়ের সাথে আমার কিছুদিন আগে বিয়ে হয়েছে ।
আমার কথা শুনে বালিকা যেনো আকাশ থেকে আছাড় খেয়ে মাটিতে পড়লো । এমন ভাবে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো দেখে মনে হচ্ছে আমি যেনো তাকে বিয়ে করার কথা বলেছি ।
-কিহ্ কি বললি তুই..!! রফিক সাহেব তোর কে হয় ..!!
- কে আবার আমার মামা শশুর । উনার মেয়ের জামাই আমি । যদি ঠিকানাটা একটু বলতেন তাহলে আমি নাদান বাচ্চাটার অনেক উপকার হতো ।
- তোর শশুর তাই না !! তুই কি ওনার মেয়েকে চিনিস ..??
- না চেনার কি আছে !! আমার বৌ আমি চিনবো না । আযব ।
- ওহ্ তাই না !! তা শুনি ওই মেয়ের নাম কি আর দেখতে কেমন !!
- কি আর বলবো দুঃখের কথা আমি ছেলেটা কতো কিউট । আপনাদের মতো হাজার ছেলের ক্রাশ আমি । কিন্তু কপাল খারাপ থাকলে যা হয় আর কি।
- মানে !!!
- কি আর বলবো !! যাকে বিয়ে করেছি তাকে দেখতে একদম মোটা অালুর মতো । চেহারা ছবি আর নাই বললাম !! সারাদিন আটা ময়দা নিয়েই পড়ে থাকে । চেহারা ছবি একদম পেত্নির মতো । আমি ভালো ছেলে বলেই তাকে বিয়ে করেছি ।
আমার কথা শুনে তো দেখি বালিকা শুধু রাগে ফুসছে । কিন্তু কেনো !!
- চুপকর ফালতু ছেলে !! তোর মতো শয়তান খারাপ ছেলে আমি জীবনেও আর একটাও দেখিনি । তুই আমায় তিথিকে চেনাস !! (রেগে আগুন )
- আরে আপনি রেগে যাচ্ছেন কেনো ?? আমি তো শুধু আমার বৌয়ের সমন্ধেই বলছিলাম । আপনি এভাবে ওভার রিয়েক্ট করছেন কেনো !?? এমন ভাবে চিৎকার করছেন যেনো কথা গুলো আপনার সমন্ধে বলছি ।
- চুপ কর ফালতু ছেলে । থাপ্পড়িয়ে তোর মুখ বাকা করে দিবো । ফাজিল ছেলে কথাকার ।মনে তো করছে ...!! (রাগে ফুসছে শুধু )
- কি শুনি ?? আদর করতে ইচ্ছে করছে তাই তো !! সমস্যা নেই এই যে গাল এগিয়ে দিলাম চাইলে কিস করতে পারেন । আমি কিছু মনে করবো না । (গালটা এগিয়ে দিয়ে )
-...ঠাসস"....। এটা দিতে ইচ্ছে করছিলো । ( গালে বসিয়ে দিয়েছে )
- ঠাসস" ঠাসস" .....। আমার আম্মু বলছে কেউ কিছু উপহার দিলে উল্টো তাকেও কিছু উপহার দিতর হয় ।
- তোকে আমি ...?? (গলা টিপে ধরে )
-আরে " আরে করছেন টাকী ?? আমি বাচ্চাটাকে জানে মেরে ফেলবেন নাকী ??( কোনো মতে নিজেকে ছাড়িয়ে )
মেয়েটা কিছু না বলে শুধু আমার দিকে রাগে ডাইনীদের মতো রাগে ফুসছে ।
- কজ ব্যাপার আমার দিকে এভাবে তাকিয়ে রয়েছেন কেনো ??
-..( তাও আগের মতো তাকিয়ে আছে )...
- আপনাকে দেখে আমার আজ একটা কথা সত্যি বিশ্বাস হয়ে গেল ।
- কিহ্ শুনি ...?? ( অগ্নি চোখে )
- এই যে পৃথিবীতে পেত্নী বলে সত্যি কিছু আছে । যদিও বা আমি আগে কথাটা বিশ্বাস করতাম না কিন্তু এখন আপনাকে দেখে আমার বিশ্বাস হয়ে গেছে !! পেত্নী সত্যি পৃথিবীতে আছে । আর তাকে দেখতে একদম আপনার মতো হবে ।
ব্যাস এটারি বাকি ছিলো । বালিকা পুরো ডায়নামাইড বোম হয়ে গেল । রাগে পুরো মুখ চোখ রক্ত বরণ ঝারণ করে আছে । যে কোনো সময় এটা আমার উপর ফেটে যেতে পারে । ব্যাপারটা আমার ভালো ঠিকলো না ।
মেয়েটা আমাকে কিছু বলার আগেই সেখান থেকে ফুর হয়ে গেলাম ।
যাহ্ বাবা ডাইনীটার হাত থেকে এবারের মতো জানে বেচেঁ ফিরলাম । ঐখানে আর কিছুক্ষণ থাকলে আমার কপালে শনি চলে আসতো । কি রাগটাই না রাগিয়ে দিয়েছিলাম মেয়েটাকে । তবে মেয়েটা দেখতে কিন্তু সেই ছিলো । এতো সুন্দর একটা মেয়েকে পেত্নী বললে সে এমনিতেই রেগে আগুন হয়ে যাবে । তার উপর আমি আবার ঠাসস" ঠাসস" করে দুটো বসিয়ে দিয়ে এসেছি ।
অনেক কষ্ট মামার বাসাটা খুজে পেলাম । যাক প্রানে প্রাণ ফিরে এল । মামাকে দিলাম একটা ফোন..
- এই মামা কই তুমি !! আমি তোমার বাসার নিচে ।
- তুই ওখানে এক মিনিট দাড়া আমি এখুনি আসছি ।
- হুম তাড়াতারি আসো ।
- দাড়া তুই ।
গেটের কাছে দাড়িয়ে রইলাম ।
- কি রে বাসায় না গিয়ে এখানে এভাবে দাড়িয়ে আছিস কেনো !!( মামা )
- এখন আসার সময় হলো তোমার !! সেই কখন থেকে এভাবে দাড়িয়ে আছি । নিজের বোনের ছেলের প্রতি এতোটুকুও মায়া নেই তোমার ।
- বলিস কি রে !!! তোর ফোন করার তো এখনও এক মিনিটও ঠিক মতো হয় নি ? তাতেই এতো দেরী হয়ে গেল ।
- হইসে এতো কথা বলতে হবে না । ভিতরে চলো । প্রচুর খিদে লাগছে আমার ।
- হুম চল ।
মামার সাথে ভিতরে চলে এলাম । বাসার ভিতরে এসে দেখি মামি রান্না ঘরে রান্না করছে । আমি কোনো আওয়াজ না করে চুপচাপ রান্না ঘরে পিছন থেকে মামির চোখ গুলো হাত দিয়ে চেপে ধরলাম ।
- আরে '' আরে করছেটা কি ?? ছাড় আমায়
- কে হতে পারে বলতো !!
- কে আবার আমার দুষ্টু আব্বুটা । ( চোখ গুলো ছাড়িয়ে নিয়ে )
-কিভাবে জানলে আমি হবো ??
- কারণ আমি আমার এই পাজি ছেলেটার আওয়াজ অনেক ভালো ভাবে বুঝতে পারি । তাছাড়া এই কাজ এক মাত্র তুই ছাড়া কেউ করে না ।
- হুম ।
- আসলে এতো দেরী হলো কেনো ?? আর তোকে এখানে আসতে কে বলছে !!! এখানে কে আছে তোর ? (অভিমান করে )
- কে আবার !! আমার এই সুইট কিউট মামিটা আছে না । ( মামিকে জড়িয়ে ধরে )
- এতোদিন পর আমাদের কথা মনে পড়লো ?? সেই কবে এসেছিলি আর আজকে এলি । আমার বুঝি তোকে দেখতে ইচ্ছে করে না ।
- কি করবো বলো !! তুমি তো আব্বু আম্মু চিনই । আমায় নিজের এলাকা ছাড়া বাইরে কথাও যেতেই দেয় না । এবারি কতো কষ্টে এখানে এলাম ।
- খুব ভালো করেছিস । এখন যা গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নে । আমি টিবিলে খাবার বেড়ে দিচ্ছি ।
- হুম জলদি করো । প্রচুর খিদে পেয়েছে আমার ।
- আমি জানি । তাই তো তোর সব পছন্দের খাবার গুলো রান্না করেছি ।
- আমি এখুনি ফ্রেশ হয়ে আসছি ।
চলে যাচ্ছিলাম !! তারপর আবার ফিরে এলাম ।
- ওযাশরুম কোনটাতে ??
- ঐটা তিথির রুম । ওখানে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নে । (মামি )
- তিথি মানে !! কার কথা বলছো তুমি ?
- কার আবার !! আমার মেয়ের । তোর মনে নেই ছোট বেলায় যার সাথে তুই সারাক্ষণ খেলা ধুলো করতি ।
- ছোট বেলায় কি করেছি না করেছি তা কি এখন মনে থাকে নাকী ?? তা তোমার মেয়ে কই !!?
- ছিলো "ঘন্টা খানেক আগে বাইরে বের হয়ে গেছে । চলে আসবে কিছুক্ষণ পর ।
- হুম....।
আর কিছু না বলে রুমে চলে এলাম । বাহ্ রুমটা তো অনেক গুছানো ॥ দেখেই বুঝা যাচ্ছে মেয়েটা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে ভালোই পছন্দ করে । যাক এখন থেকে এই রুমেই আরাম করে থাকা যাবে ।
-মামি কি হলো খেতে দেও !?? বললাম না প্রচুর খিদে পেযেছে ।
- আরে আগে খাবার টেবিলে বসবি তো নাকী !! তারপর নাহয় খাবার বেড়ে দিবো । ( মামি )
- দাও তাড়াতাড়ি ।
- হুম....।
খাবারের আইটেম দেখে আর তোর সইছিলো না । সাথে সাথে কাজে লেগে পড়লাম ।
- মামি তোমার রান্নাটা কিন্তু সত্যিই অন্যরকম । কতোদিন পর তোমার হাতের এমন রান্না খাচ্ছি । ( খেতে খেতে )
-নে এখন থেকে প্রতিদিন তোকে এমন ভাবে রান্না করে খাওয়াবো ।
- সত্যি !!
- হুম...। এখন চুপচাপ খাওয়া শেষ কর । খাবার খেতে খেতে কথা বলতে হয় না ।
- হুম...।
মনের সুখে নিজের পছন্দের রান্না করা খাবার খাচ্ছি । এরি মাঝে হঠাৎ করে বাসার কলিংবেল বেজে উঠলো ।
- মনে হয় তিথি এসে গেছে । তুই বসে আরাম করে খাওয়া শেষ কর । আমি দরজাটা খুলে দিয়ে আসি । ( মামি )
- হুম...।
মামি চলে গেল দরজা খোলার জন্য ।
- কি ব্যাপার সেই কখন গেছিস !! আসতে এতো দেরী হলো কেনো ? ( মামি )
- আর বলো না রাস্তায় যাওয়ার সময় একটা শয়তান কুত্তার সাথে দেখা হয়ে গেছিলো । ( তিথি রাগি গলায় )
- বলিস কি !! তোকে কথাও কামড়-টামড় দেয় নি তো ? ( খানিকটা ভয় পেয়ে )
- আরে নাহ্ কামড় কেনো দিতে যাবে !! তার আগেই ঠাঠিয়ে কুত্তাটাকে সোজা করে দিয়েছি । ( গালে হাত দিয়ে )
- মানে ...??
- কিছু না । তুমি আর এতো প্রশ্ন করো না তো ।
- আচ্ছা ঠিক আছে । এখন যা গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নে । খাবার বেড়ে দিচ্ছি খেয়ে নে ।
- হুম .....।
-ও হ্যাঁ তোকে তো বলতে বুলেই গেছিলাম বাসায় সাকিল এসেছে । এখন থেকে তোর কলেজেই স্টাডি করবে ।
- সাকিল মানে !! তোমার ঐ প্রিয় শয়তান ছেলেটা ?
- শয়তান কেনো বলছিস !! ছেলেটা আমার কতো ভদ্র জানিস ?
- সেটা তো ফুফুর "কাছ থেকে অনেক ভালো করেই শুনেছি ।
- ওসব কথা রাখ । যা গিয়ে ছেলেটার সাথে কথা বলে আয় ।
- হুম চলো...।
আমার খাওয়া দাওয়া শেষ তাই ফোনটা নিয়ে সোফার ওপর পাশে বসে ফোন চাপছি ।
- Hii.....আমি তিথি ? ( পিছন থেকে )
- hello" ...আমি সাহ্ফি........( পুরাই শক" খেয়ে - hello" ...আমি সাহ্ফি........( পুরাই শক" খেয়ে গেলাম

Comments

Post a Comment